প্রকাশিত: Mon, Jun 10, 2024 1:38 PM
আপডেট: Tue, Apr 29, 2025 4:32 AM

[১]কর নির্ভর, ঋণ নির্ভর ও লুটেরা বান্ধব বাজেট ফোকলা অর্থনীতির ওপর দাঁড়িয়ে আছে: মির্জা ফখরুল

শাহানুজ্জামান টিটু: [২] বাংলাদেশ কার্যত দেউলিয়াত্বের দোরগোড়ায় উপনীত হয়েছে এমন মন্তব্য করে  বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, সরকার বাজেটে যেভাবে করের বোঝা বৃদ্ধি করেছে, মূল্যস্ফীতির চাপে পিষ্ট সাধারণ জনগণের অবস্থা আরও শোচনীয় হয়ে পড়েছে। 

 [৩] রোববার বিকেলে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি মহাসচিব বলেন, আইএমএফের পরামর্শ উপেক্ষা করে রাজস্ব বাড়ানোর ক্ষেত্রে এই বাজেটে কোনো সংস্কার প্রস্তাব আসেনি। যদিও আইএমএফের শর্ত পূরণের কথা বলে বিদ্যুৎ ও জ্বালানির দাম ইতোমধ্যে কয়েকগুণ বৃদ্ধি করা হয়েছে। 

[৪.১] তিনি বলেন, যারা কর ফাঁকি দেয় তাদের নিকট থেকে কর আদায়ের কোনো পরিকল্পনা না করে যারা নিয়মিত কর দেয় তাদের কাছ থেকে বাড়তি কর আদায়ের দিকে মনোযোগ দেওয়া হয়েছে। 

[৪.২] মুখে ‘ডিজিটাল’ বা ‘স্মার্ট’ বাংলাদেশের কথা বললেও মুঠোফোনে কথা বলার বিল ও ইন্টারনেট পরিষেবার বিল বাড়ানো হয়েছে। 

[৪.৩] ল্যাপটপের আমদানি শুল্ক বাড়ানো হয়েছে। তথ্য প্রযুক্তিকে সহজলভ্য করার সরকারি ঘোষণাকে মিথ্যা আশ্বাস ও ফাঁপা বুলিই প্রতীয়মান হয়। 

[৫] মির্জা ফখরুল বলেন, বাংলাদেশে প্রতিটি নবজাতক শিশুকে ১ লক্ষ ৫৫ হাজার টাকা ঋণের বোঝা মাথায় নিয়ে জন্ম নিতে হবে। দেশের সামগ্রিক অর্থনীতিই আজ ঋণময়। মেগা প্রকল্পের অর্থনৈতিক ফিজিবিলিটি বিহীন এসব ঋণ আমাদের সমগ্র অর্থনীতিকে দেশি-বিদেশি অলিগার্কদের কাছে জিম্মি করে ফেলছে। 

[৬.১] তিনি বলেন, সরকারের কোনো সংস্থাই কালোটাকা সাদাকারীদের কোনো ধরনের প্রশ্ন করতে পারবে না। অর্থাৎ দায়মুক্তি বা আইনি ছাড় দেওয়া হলো। এর ফলে সৎ ও বৈধ আয়ের করদাতাদের নিরুৎসাহিত এবং দুর্নীতিকে সরকারিভাবে উৎসাহিত করা হলো। 

[৬.২] দুর্নীতি করার এহেন লাইসেন্স প্রদান অবৈধ, অনৈতিক ও অসাংবিধানিক। ১৫% করে কালোটাকা সাদা করার বিপরীতে সৎ করদাতাদের সবোর্চ্চ ৩০% হারে কর দেওয়ার বিধান বৈষম্যমূলক ও অসাংবিধানিক। 

[৬.৩] বর্তমান গণবিরোধী সরকার শিক্ষাখাতে ক্রমাগত বরাদ্দ কমাচ্ছে। এ বারের বাজেটে স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দ রেখেছে জিডিপির ০.৭৪ শতাংশ, যা নিতান্তই অপ্রতুল।

[৭.১] মির্জা ফখরুল বলেন, এই বাজেটে কর্মসংস্থান তৈরির কোনো দিকনির্দেশনা নেই। 

[৭.২] ডলার সংকটের কথা বলে আমদানি সংকুচিত করায় ক্যাপিটাল মেশিনারিস এবং র’ মেটারিয়ালস আমদানি প্রায় অবরূদ্ধ। বাজেট ঘাটতি মেটাতে ব্যাংকিং খাত থেকে যে বিপুল অংকের ঋণ নেওয়ার প্রস্তাব করা হয়েছে এতে বেসরকারিক খাতের বিনিয়োগ মারাত্মকভাবে বাধাগ্রস্ত হবে। 

[৭.৩] গত ১৫ বছরে সরকারের আশ্রয়ে ও প্রশ্রয়ে খেলাপি ঋণ বেড়েছে লাফিয়ে লাফিয়ে। ২০০৯ সালে ব্যাংক খাতে খেলাপি ঋণ ছিল ২২ হাজার ৪৮১ কোটি টাকা, যা এখন ১ লাখ ৮২ হাজার ২৯৫ কোটি টাকা। দুই লক্ষের মাইল ফলকে পৌঁছাতে আর মাত্র ১৭ হাজার ৭০৫ কোটি টাকা বাকি। কেবল গত তিন মাসেই বৃদ্ধি পেয়েছে ৩৬ হাজার ৬৯২ কোটি টাকা। অর্থাৎ ৯% থেকে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১১%। সম্পাদনা: সমর চক্রবর্তী